ঢাকা , সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ , ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় অধিবাসীরা হচ্ছে অভিবাসী গোপালগঞ্জে মামলার ভয় দেখিয়ে ওসির রমরমা বাণিজ্য কমতে পারে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন কর পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে-উপদেষ্টা বাড়ি ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা নেই বরগুনায় ইঁদুর মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে কৃষকের মৃত্যু শতাধিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মৃত্যু এপ্রিলে এলপিজির দাম অপরিবর্তিত থাকছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনের দাবি মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে ডেঙ্গুর তীব্র ঢেউয়ের শঙ্কাতেও প্রতিরোধ প্রস্তুতিতে নজর নেই ঈদ উপলক্ষে অর্ধেকের বেশি গার্মেন্ট কারখানা এখনও বন্ধ এবার বায়ুদূষণে শীর্ষে কাঠমান্ডু স্থানীয় সরকার সচিবকে জনপ্রশাসনে সংযুক্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাকা স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকের হুমকি, নিরাপত্তা চেয়ে স্বামীর সংবাদ সম্মেলন সাটুরিয়ার বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দেখতে উপচেপড়া ভিড়, রাজস্ব আয় ৫ লাখ চাটমোহরের হান্ডিয়ালে জমি জবরদখলের অভিযোগ

বিমানবন্দরে সিকিউরিটি বিভাগে ছন্দপতন

  • আপলোড সময় : ০৬-০৪-২০২৫ ০২:৫৮:১৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৪-২০২৫ ০২:৫৮:১৮ অপরাহ্ন
বিমানবন্দরে সিকিউরিটি বিভাগে ছন্দপতন
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছন্দপতনের ছাপ পড়েছে ফ্যাসিবাদী চক্রে বন্দি থাকা সকল স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোতে। ঠিক তেমনই এক চক্রের জালে দীর্ঘদিন বন্দি ছিল দেশের একমাত্র এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ১৯৮৫ সালে, বর্তমান সিভিল এভিয়েশন অথরিটি একটি অধ্যাদেশ এর মাধ্যমে অর্পিত সাংগঠনিক এবং আর্থিক উভয় ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ পরিচালন ক্ষমতাসহ একটি কর্পোরেট সংস্থা হিসাবে অস্তিত্ব লাভ করে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতের উন্নয়নে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং দেশীয় পর্যটনের উন্নয়ন ও বিকাশে নীতি নির্ধারণ ও সহযোগিতা করা। ব্যবসা, জন-বল ও সকল এয়ারলাইন্সের আন্তর্জাতিক সেতু বন্ধনের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হলো এয়ারপোর্ট। যাত্রী সেবা, আমদানি-রফতানিসহ নানা কর্মের মাধ্যমে সরকার সবচেয়ে বেশি রাজস্ব পেয়ে থাকে এয়ারপোর্ট থেকে। বেবিচকের নিজস্ব এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী, ক্রু এবং বিমানের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে আসছে। যেমন অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং অবৈধ ড্রাগের জন্য স্ক্যানিং করা, বিমান এবং লাগেজ এর নিরাপত্তা পরীক্ষা পরিচালনা করা, এয়ারপোর্ট টহল কার্যক্রম, নিরাপত্তা হুমকি রোধ এবং সনাক্ত করা, যে কোনো জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করা ছাড়াও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে কাজ করা। এছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত একটি দল আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং যাত্রী হয়রানি রোধের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলো ২০১০ সালের জুন থেকে। যার ছন্দ পতন ঘটে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। ফ্যাসিবাদ সরকার পতনে পর যেন ক্ষমতার পালা বদলের হিসেব গড়মিল হয়ে যাচ্ছে বারবার। কার হাতে থাকছে এ এভিয়েশনের অভ্যন্তরীণে থাকা রামরাজত্ব। সময়ের বিবর্তণে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটিতে বাসা বেঁধেছে নানা নিয়ম-অনিয়ম আর জটিলতা। অধিকার আর বৈষম্যে রোধের দাবি নিয়ে দফায় দফায় আন্দোলন করছে এয়ারপোর্টে থাকা বিভিন্ন মহল। সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিজস্ব সিকিউরিটি ফোর্স তাদের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন গত ১৭ মার্চ। এ বিষয়ে এভসেক বিভাগে কর্মরত কর্তাব্যক্তিরা বলেন, গত ৫ আগস্ট এর পরে শুধু এয়ারফোর্স দায়িত্ব পালন করেন নাই সাথে আমরাও করেছিলাম। তবে সম্পূর্ণ ক্রেডিট পাচ্ছে তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের একটি প্রস্তাব করা হয়েছে যা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমরা মনে করি। দেশের আভ্যন্তরিণ কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সকল সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা পালন করেন এবং পরবর্তী সময়ে তারা ব্যারাকে ফিরেও যায়। কিন্তু এয়ারফোর্স কেন ফিরে যাচ্ছে না, কেন সত্তর শতাংশ এয়ারফোর্সকে নিয়ে গঠন করা হচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি ফোর্স, এমন প্রশ্ন অনেকের? তবে ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসর বেবিচকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। অনেক কর্তাব্যক্তিরা বলেন, তারেক সিদ্দিকী কোটি কোটি টাকার প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছিল সে সময়ে। এছাড়াও এয়ারফোর্সের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছে যাত্রীসহ অন্যান্য সব বাহিনীর সদস্যরা। তাদের মন মত কিছু না হলেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কন্ট্রোল রুম নামে আয়না ঘরে। এয়ারপোর্টের অভ্যন্তরে প্রবেশের জন্য অন্যদের পাশের প্রয়োজন হলেও তাদের রয়েছে আবাদ বিচরণের সুযোগ। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী যদি বেসামরিক বাহিনীতে যোগ দেয় তবে দেশের সুরক্ষা কাঠামো অবশ্যই ঝুঁকিতে পড়বে। এছাড়াও আইকাও এর আইন অনুযায়ী জটিলতা তৈরি হবে এবং অন্যান্য দেশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলেও মন্তব্য করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, যদি বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠিত হয় তাহলে বেবিচকে নতুন নিয়োগ হবে না, কারো প্রমোশন হবে না, বিমান বাহিনী সিভিলিয়ানদের গোলাম বানিয়ে রাখবে। বেবিচকে সিভিলিয়ান কমে গিয়ে বিমান বাহিনীর সদস্য বৃদ্ধি পাবে। যে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য জুলাই-আগস্ট বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে সেই কোটা পদ্ধতি ব্যবহার করে বিমান বাহিনী বিমানবন্দরে তাদের দখলদারি বাড়াতে চাচ্ছেন। লাখ লাখ মেধাবী তরুণ বেকার ছেলে-মেয়েরা জব পাচ্ছে না অপরদিকে বিমান বাহিনী দুই জায়গা থেকে সুবিধা পাবে। এর ফলে অভ্যন্তরীন অসন্তোষ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও আরেকটি দাবি আছে, বিমানবন্দরে কোনো সামরিক বাহিনী থাকবে না। বেবিচকের চেয়ারম্যান এবং মেম্বার গুলো আসবেন সচিবালয় থেকে। এদিকে বিভিন্ন মহল থেকে জানা যায়, বিমান বাহিনী নাকি বিমানবন্দরের নাজুক পরিস্থিতিতে বিমান বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা দায়িত্ব নেয়ার পর সেখানকার নানা ধরনের অসঙ্গতি দূর হয়েছে। লাগেজ কাটা, লাগেজ দেরিতে পাওয়াসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও এয়ারপোর্টের যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধিতে দেশ বিদেশে সুনামের সাথে কাজ করছেন বিমান বাহিনী। এয়ারপোর্ট কেন্দ্রিক ঘটে আসা চোরাকারবারিদের নানা অপকর্মের জটিলতা কী বন্ধ হয়ে গেছে নাকি অন্তরালে অন্য কিছু ঘটে চলেছে, এমন প্রশ্ন অনেকেরই? বিষয়ে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ৫৬ জনকে প্রমোশন দেয়া হয়েছে এবং তাদের যৌক্তিক দাবি গুলোও মেনে নেয়া হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স